বাংলাদেশের সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থান
বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীনাভূমি অপরূপ সৌন্দর্য,ঐতিহ্য,ইতিহাস ও সংস্কৃতির মিশেলে এটি পর্যটকদের জন্য এক মনোরম মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।আর এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসে বিশ্বে বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।পাহাড়,সমুদ্র,নদ-নদী,বন ঐতিহাসিক স্থাপনা এক মনমুগ্ধকর পরিবেশ।
- বাংলাদেশের সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থান
- কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
- সেন্ট মার্টিন দ্বীপ
- সুন্দরবন
- সিলেট চা বাগান ও জাফর জাফলং
- বান্দরবান পাহাড়
- রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদ
- টাঙ্গুয়ার হাওর
- কুয়াকাটা
- সাজেক ভ্যালি
- কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
- লেখকের মন্তব্যঃবাংলাদেশের সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থান
বাংলাদেশের সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থান
বাংলাদেশ শুধু খুব সৌন্দর্যের দেশ নয় ইতিহাস,ঐতিহ্যের দেশ ও বটে এখানে আছে বিশ্বে অন্যতম দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার প্রবাল ঘেরা সেন্টমার্টিন দ্বীপ,জীব বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ সুন্দরবন,সবুজে ঘেরা সিলেটে চা বাগান ও জাফলং নৈসর্গিক বান্দরবানের পাহাড় যা মুগ্ধ করে, অনাবিল প্রশান্তি ছড়িয়ে দেয় এবং বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়।
প্রকৃতির সান্নিধ্য পাবেন,তেমনি শ্রমিকদের জীবন সংগ্রাম আর চা সংস্কৃতির বৈচিত্র্যও বুঝতে। পারবেনমেঘালয়ের পাহাড় থেকে নেমে আসা নদীর স্বচ্ছ জলে নৌবিহার করা যায়।নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীব বৈচিত্র্যের কারণে এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটক কেন্দ্র। শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই নয় জীবন বৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়।সব মিলে বাংলাদেশকে দিয়েছেন এক শতন্ত্র পরিচয়।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। বিশ্বে দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত নীল সমুদ্র,সোনালী বালুকাবেলা এবং ঢেউয়ের মুগ্ধ কর শব্দ পর্যটকদের মন ভরিয়ে দেয়।বাংলাদেশের সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থানএ কক্সবাজারএর হিমছড়ি,ইনানি বিচ,মহেশখালী দ্বীপ ভ্রমণকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে।সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগের জন্য কক্সবাজারের বিকল্প নাই। কক্সবাজারে রয়েছে সারিসারি ঝাউবন বালুর নরম বিছানা ও নীল জলরাশির গর্জন যা কক্সবাজারকে করেছে দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয়।পর্যটকদের জন্য আধুনিক হোটেল মোটেল ও বার্মিস মার্কেট এখানে অবস্থিত।এটি একটি রূপময়ী সমুদ্র সৈকত যার রূপ প্রতিদিন পরিবর্তিত হয়। ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ
বাংলাদেশের একমাত্র প্রকৃতিক সৌন্দর্যের ভরপুর প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার থেকে সমুদ্রপথে অবস্থিত।নীল জলরাশি,প্রবাল প্রাচীর, নারিকেল গাছের সাড়ি আর নির্জন পরিবেশ।এটিকে ভ্রমণকারীদের স্বপ্নের স্থান করে তুলেছে।বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের বঙ্গোপসাগরের উত্তর পূর্বাংশে অবস্থিত ৮ কিলোমিটারের একটি ছোট দ্বীপ।স্কুবা ডাইভিং ও স্নরকেলিং ও নৌবিহারের জন্য এটি অন্যতম।চিপস,শুকনো মাছ ও সি-ফুড এখানকার বিশেষ খাবার।স্থানীয়ভাবে নারিকেলে জিঞ্জিরাও বলা হয়। মায়ানমার কক্সবাজার জেলার টেকনাফ হতে প্রায় নয় কিলোমিটার দক্ষিণে ও মায়ানমার উপকূল হতে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে আর মায়ানমার উপকূল হতে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত।
আরো পড়ুনঃবাংলাদেশের বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর ভ্রমনের স্থান
সুন্দরবন
সুন্দরবন হল বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত এটি প্রশস্ত বনভূমি বিশ্বের বিস্মবলির অন্যতম।বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন ৬ ডিসেম্বর ১৯৯৭খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে। রয়েল বেঙ্গল টাইগার চিত্রা হরিন কুমির বানর অসংখ্য পাখির আবাসস্থল এই বনে।পদ্মা না ব্রহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকায় বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত।নদী খাল বিল আর সবুজ বনের এক অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্ম দিয়েছে। কটকা কচিখালি হারবারিয়া এবং দুবলারচর সুন্দরবনের জনপ্রিয় ভ্রমণ স্পট
দশ হাজার কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬৫০০ বর্গ কিলোমিটার ৬৬% পেয়েছে বাংলাদেশের এবং বাকি ৩,৪৮৩ বর্গ কিলোমিটার(৩৪%) ভারতের মধ্যে রয়ে গেছে। শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই নয় জীবন বৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়।
সিলেটর চা বাগান জাফলং
সিলেটে চা বাগান শুধু সবুজ নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের প্রতীক নয়,ইতিহাস অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক এক মেলবন্ধন। চা বাগানে সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন শত শত দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন।সারি সারি চা বাগান, পাহাড়ি ঝরনা আর সবুজ প্রাকৃতিক দৃশ্য মন ভরিয়ে দেয়। পাহাড়ি ঢালে সারি সারি চা গাছের ছায়া,দূর থেকে সবুজ কার্পেটের মতো লাগে।সিলেটে চা বাগান গুলো শুধু চাষের ক্ষেত্র নয়,প্রকৃতিক এক স্বপ্নিল রুপও।ভোরের কুয়াশা আর সন্ধ্যার নরম আলো এই দৃশ্যকে করে আরো মায়াবী।
সিলেট যেন সবুজ আর নীলের মেলবন্ধন।সেখানে মেঘালয়ের পাহাড় থেকে নেমে আসা নদীর স্বচ্ছ জলে নৌবিহার করা যায়। পর্যটকরা বাগানের ভিতর হেঁটে বেড়াতে পারেন,বাগানের ভিতর দিয়ে চলে গেছে ছোট ছোট কাঁচা পথ ছবি তুলতে পারেন এবং স্থানীয় চা শ্রমিকদের জীবন যাপনের কাছ থেকে দেখতে পারেন।মাঝে মাঝে দেখা মিলে টিনের ছাউনির শ্রমিকদের কুঁড়েঘর।এখানে ভ্রমণ করলে আপনি যেমন প্রকৃতির সান্নিধ্য পাবেন,তেমনি শ্রমিকদের জীবন সংগ্রাম আর চা সংস্কৃতির বৈচিত্র্যও বুঝতে পারবেন।সিলেটের চা বাগান ও জাফলং এর প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য মনোমুগ্ধ মানসিক প্রশান্তর এক বিরল রুপরেখা।
বান্দরবান পাহাড়
বান্দরবান বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান পর্যটক কেন্দ্র, স্বর্গের মতো।নীলগিরি,নীলাচল,বগালেক,চৌম্বক পাহাড়, রুপা ও থানচি এর প্রধান আকর্ষণ।এখানকার পাহাড়ি আদিবাসী সংস্কৃতি,ঝরনা আর প্রকৃতির শান্ত সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। প্রকৃতি পাহাড়ি সংস্কৃতি ও অভিযাত্রীক কর্মকাণ্ডের জন্য এটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়।পাহাড়ি ভূপ্রকৃতি সবুজ বন আর নদী-ঝরনায় সমৃদ্ধ বান্দরবান একটি আবশ্য ভ্রমণযোগ্য স্থান।দেশের সবচেয়ে উঁচু পর্বত শৃঙ্গ গুলোর মধ্যে কেওক্রাডং,তাজিংডং,চিম্বুক ইত্যাদি বান্দরবনে অবস্থিত।শীতকালে তুলনামূলক ঠান্ডা, আর বর্ষায় প্রকৃতি হয় আরো মনোরম।
রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদ
চট্টগ্রাম পার্বত্য জেলার অন্তর্গত রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা জনপ্রিয় পর্যটক এলাকা।কাপ্তাই হ্রদ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কৃত্রিম হ্রাদ রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত।নীল জলরাশি,পাহাড় ও বনভূমির সমন্বয় পর্যটকদের এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা দেয়।নৌকায় করে হ্রদের ভিতরেঘুরে বেড়ানো, ঝুলন্ত সেতু দেখা আর আদিবাসীদের সংস্কৃতি উপভোগ করা বিশেষ অভিজ্ঞতাঅর্জন করা যায়।এখানে পর্যটক আকৃষ্ট অনেক কিছু দেখার আছে।বিশেষত কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত বাঁধের দ্বারা সৃষ্ট।এই হ্রদের স্বচ্ছ ও শান্ত পানিতে নৌকা ভ্রমণ অত্যন্ত সুখকর।হ্রদের উপর আছে ঝুলন্ত সেতু।জেলার বরকল উপজেলায় শুভলং এর পাহাড়ি ঝর্ণা ইতিমধ্যে পর্যটকদের কাছে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে।ভরা বর্ষামৌসুমে মূল ঝর্ণার জলধারা প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু থেকে নিচে আছড়ে পড়ে। এছাড়া কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান উল্লেখযোগ্য ভ্রমণ এলাকা।
টাঙ্গুয়ার হাওর
প্রকৃতিপ্রেমিক ভ্রমণপিপাসুদের জন্য টাঙ্গুয়ার হাওর এক অনন্য গন্তব্য, টাঙ্গুয়ার হাওর বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুনামগঞ্জ জেলায় ধর্মপাশা এবং তাহেরপুর উপজেলার মাঝখানে অবস্থিত একটি বিষ্ময়ক বিস্তীর্ণ জলাভূমি,যা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য স্বর্গ।এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠা পানির জলাভূমি।এটি প্রায় ১০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং বর্ষা মৌসুমে যেন বিশাল সমুদ্রের রূপ ধারণ।চারদিকে সবুজ পাহাড় আর মেঘলা আকাশের নিচে বিস্তৃত পানির রাজ্য যা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।আকাশের প্রতিচ্ছবি আর পানির মাঝে জেগে থাকা সবুজ দ্বীপগুলো আপনাকে মুগ্ধ করবে।শীতকালে হাওরে আসে হাজার হাজার অতিথি পাখি যা পরিবেশকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলে।
এ নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীব বৈচিত্র্যের কারণে।এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটক কেন্দ্র। শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই নয় জীবন বৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়।এখানে ভ্রমণকারীদের প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় ভাবে সময় কাটানোর সুযোগ পান হাওরের শান্ত নীল পানি,পাহাড়ের ছায়া আর অতিথি পাখি কিচিরমিচির এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেয়।টাঙ্গোর হাওরে আশেপাশে আরো কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেমন,নীলাদ্রি লেক এবং শিমুল বাগান। নীলদ্রি লেকের পানি আর পাহাড়ি দৃশ্য সত্যিই মুগ্ধকর।টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ প্রকৃতির সান্নিধ্যে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।বর্ষাকালে জলরাশি, শীতকালে অতিথি পাখি সমারোহ, আশেপাশে নীলাদ্রি লেক ও শিমুল বাগান মিলে এটি বাংলাদেশের এক প্রাকৃতিক রত্ন।
কুয়াকাটা
পর্যটকদের কাছে কুয়াকাটা সাগর কন্যা হিসেবে পরিচিত।বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে একটি সমুদ্র সৈকত যা পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় অবস্থিত।কুয়াকাটার সাদা বালির সৈকতের তীর থেকে বঙ্গোপসাগরে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় দেখা যায়।১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সৈকত বৈশিষ্ট্য কুয়াকাটা বাংলাদেশের অন্যতম সমুদ্র সৈকত। যেসব দর্শনীয় স্থান রয়েছে কুয়াকাটায় সেগুলো হলো-ফাতরার বন,পশ্চিম দিকে ম্যানগ্রোভ বন শুরু হয়েছে যার,নাম ফাতার বন।সংরক্ষিত বনভূমি ফাতরার বন ইতিমধ্যে দ্বিতীয় সুন্দরবন হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।এখানেরয়েছে কেওড়া,গেওয়া,সুন্দরী,ফাতরা,গরান,গোলপাতা ইত্যাদি ম্যানগ্রোভ প্রজাতির উদ্ভিদ এবং বানর,শুকর সহ অসংখ্য জীব জন্তু ও পাখি।
সমুদ্র সৈকত থেকে ইঞ্জিন চালিত বোটে এক ঘণ্টা সময় লাগে যাত্রাতে ফাতরার বনে যাওয়ার জন্য। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পূর্বে রাখাইন আদিবাসীদের আরেকটি বাসস্থল মিশ্রিপাড়ায় রয়েছে আরেকটি বৌদ্ধমন্দির।এই মন্দিরেই রয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মূর্তি।এখান থেকে কিছু দূরে আমখোলা পাড়ায় রয়েছে বড় রাখাইন বসতি।ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা হল সদরঘাট থেকে লঞ্চের পটুয়াখালী।সেখান থেকে বাসে কুয়াকাটা।ঢাকা থেকে পটুয়াখালী রুটে চলাচল করে এমভি দ্বীপরাজ ও সৈকত ইত্যাদি লঞ্চ।
সাজেক ভ্যালি
বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার অন্তর্গত সাজেক ইউনিয়নের একটি বিখ্যাত পর্যটন স্থান।সাজেক ভ্যালি বর্তমান সময়ের ভ্রমণ পিপাসু মানুষের সবচেয়ে জনপ্রিয় গন্তব্যস্থান।সাজেকে সর্বত্র মেঘ,পাহাড় আর সবুজ।এখান থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখা যায়।এই সাজেক উপত্যকায় রয়েছে দুইটি পাড়া-রুইলুই এবং কংলাক। কংলাক পাড়া ১৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত।সাজেক "রাঙ্গামাটির ছাদ" নামে পরিচিত।সাজেক উপত্যকা তার প্রকৃতিক পরিবেশের জন্য পরিচিত এবং এটি সবুজ পাহাড়,ঘনবন এবং পাহাড়ি ভূখণ্ড দ্বারা বেষ্টিত।
পাহাড়ের মধ্য দিয়ে অনেক ছোট নদী প্রবাহিত হয় যার মধ্যে সাজেক-কাসালং এবং মাসালং উল্লেখযোগ্য।সাজেক উপত্যকায় যাওয়ার পথে ময়নি পর্বতমালা এবং ময়নী নদী অতিক্রম করতে হয়। সাজেকের রাস্তায় খাড়া ঢাল এবং অবতরণ রয়েছে। সাজেকে গেলে অবশ্যই সকালে ভোরের সময়টা মিস করবেন না। দিন কিংবা রাত সাজেক যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবির মত,সময় গড়ায় তবু সাজেক পুরাতন হয় না।বিকেলের কোন উঁচু জায়গা থেকে সূর্যাস্ত রঙ্গিন রূপ আপনাকে বিমোহিত করবে। আর সন্ধ্যার পর আকাশের কোটি কোটি তারার মেলা,আপনার প্রাণ জুড়িয়ে দিবে নিমেষেই। আকাশ পরিষ্কার থাকলে মিল্কিওয়ে বা ছায়াপথের।
মহাস্থানগড়
মহাস্থানগড় বাংলাদেশে অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্ত মহাস্থানগড়।এক সময় মহাস্থানগড় বাংলার রাজধানী ছিল।এই নগরী ইতিহাসের পুণ্ড্রবর্ধন বা পুন্ড্রনগর নামেও পরিচিত ছিল।মহাস্থানগড় শিলালিপি ব্রাহ্মী লিপিতে উত্তীর্ণ একটি খন্ডিত শিলালিপি। এই শিলালিপি বাংলাদেশে বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ে পাওয়া গেছে।মহাস্থানগড়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান হল গোকুল মেধ।স্থানীয়ভাবে এটাকে বেহুলার বাসর ঘর বলে।বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা ও হিউয়েন সাং তাদের ভ্রমণ কাহিনীতে এটিকে একটি বৌদ্ধমঠ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।গোবিন্দ ভিটার একদম সামনে মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর।এটি মহাস্থানগড়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্য কে তুলে ধরার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে।জাদুঘরের মৌর্য,গুপ্ত ও পাল রাজ বংশের প্রাচীন নির্দশনসহ সোনা,রুপা,ব্রোঞ্জ,পোড়ামাটির মূর্তি এবং অলংকার সংরক্ষিত রয়েছে।
কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত এ এস্থান মৌর্য,গুপ্ত,গৌড়,পাল বৌদ্ধ রাজারা ও সেনা শাসকবর্গের প্রাদেশিক রাজধানী ও পরবর্তীকালে হিন্দু সামন্ত রাজাদের রাজধানী ছিল। মহাস্থানগড়ের তিন দিক পরিবেষ্টিত এবং অসংখ্য কালোত্তীর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনা সমৃদ্ধ এই ভীমের জঙ্গল।মহাস্থান ঘরে থাকার মত তেমন ভালো হোটেল নেই।৩০ মিনিট দূরত্বে বগুড়ায় থাকতে পারবেন হোটেল মম ইন,(ফাইভ স্টার মানের) হোটেল নাজ গার্ডেন (ফোর স্টার মানের)পর্যটন মডেল (বনানী মোড়) ইত্যাদি জায়গায়।এগুলো প্রত্যেকটাই শহরের নিরিবিলি পরিবেশে অবস্থিত।ঢাকা থেকে যেভাবে যাবেন গাবতলী বা মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে সরাসরি বাসে এবং কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনে করে প্রথমে বগুড়া যেতে হবে।মহাস্থানগরে বেড়ানোর শেষে এখানকার বিখ্যাত চালের কটকটি খেতে এবং পরিবারের জন্য নিতে ভুলবেন না।
লেখকের মন্তব্যঃবাংলাদেশের সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থান
বাংলাদেশের সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থান প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ভরপুর এক অনন্য দেশ।এক রঙ্গিন ক্যানভাস। যেখানে কক্সবাজারের অন্তহীন সমুদ্র,নীল জলরাশি,সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রবাল সৌন্দর্য, সিলেটের চা-বাগান ও জাফলংয়েরসবুজ ঘেরা প্রাকৃতিক দৃশ্য।সুন্দরবনের রহস্যময় ম্যানগ্রোভ,বান্দরবানের পাহাড়ের ওপার শোভা, রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের শান্ত জল আর মহাস্থানগড়ের ঐতিহ্য মিলেমিশে এক অনন্য সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে।এ সৌন্দর্য শুধু চোখকে নয় আন্তর্জাতিক পর্যটকদেরও মুগ্ধ করে।আমাদের উচিত এই প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পদ গুলোকে অক্ষুন্ন রাখা। যেন বাংলাদেশের এই অপার সৌন্দর্য যুগের পর যুগ ধরে বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে অক্ষুন্ন রেখে যেতে পারে এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে পারি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url