কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা
প্রযুক্তির অগ্রগতি আজকের মানব সভ্যতাকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে এসেছে যেখানে মানুষের মত চিন্তা ও সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম যন্ত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।এই প্রযুক্তি হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমতা বা Artificial Intelligence(AI)।কৃত্রিম বুদ্ধিমতা(AI)মানুষের তৈরি এমন একটি টেকনোলজি যা মেশিনকে মানুষের মতো বুদ্ধিমত্তা চিন্তাভাবনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ইত্যাদি ক্ষমতা গুলির দেওয়া হয়।
আধুনিক প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখানে মেশিনগুলিকে এমন ভাবে ট্রেনিং দেওয়া হয় যাতে তারা সহজে কোন জটিল সমস্যা সমাধান করতে পারে এবং মানুষের জীবনকে সহজ,সুযোগ সুবিধা দিতে পারে এবং আরো দক্ষ করে তুলতে পারে।
পোস্ট সুচীপত্রঃকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শুরু
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রকারভেদ
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ৫টি সেরা ব্যবহার
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অসুবিধা
- বাংলাদেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার
- ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সম্ভাবনা
- লেখক এর মন্তব্যঃকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা(AI) আমাদের মানুষের জনজীবনে ব্যপক ভাবে প্রভাব ফেলেছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি
বুদ্ধিমত্তা এমন একটি প্রযুক্তি যা এখন পর্যন্ত মানুষের সবচেয়ে সেরা আবিষ্কার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আর্টিফিশিয়াল ইন্টারনে হলো কম্পিউটার বিজ্ঞানের এমন একটি উন্নত শাখা যেখানে Natural language,Machine learning,Deep Learning ইত্যাদি প্রয়োগের মাধ্যমে আশিসের ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করা হয়। এর ফলে কম্পিউটার এবং মেশিন সিস্টেমকে মানুষের মতো চিন্তা করাই।সহজ ভাবে বলা যেতে পারে এটি এমন একটি প্রযুক্তি যেটা কিনা মেশিন ও কম্পিউটারকে হিউমানের মতো আচরণ করতে শেখায়। আধুনিক প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শুরু
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন কম্পিউটার বিজ্ঞানী জন ম্যাকার্থি(John McCarthy)১৯৫৫ সালে।এজন্য তাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জনক বলা হয়।১৯৫৬ সালের তিনি ডার্টমাউথ কলেজে একটি সম্মেলন আয়োজন করেন যা AI গবেষণার শুরু করেতে সাহায্য হয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন আলোড়ন সৃষ্টিকারি ChatGPTএপ্লিকেশনটি চালু হওয়ার পর থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হলেও তা নিয়ে চর্চা কিন্তু শুরু হয়েছে আরো অনেক আগে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রকারভেদ
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা(AI)মানে মানুষের তৈরি এমন এক প্রযুক্তি যা যন্ত্রকে মানুষের মতো চিন্তা করতে শেখায়।কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে
- সংকীর্ণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাঃ নির্দিষ্ট একটি কাজের জন্য তৈরি।যেমন- ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট বা অনুবাদ সফটওয়্যার।
- সাধারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাঃ সাধারণ মানুষের মতো যে কোনো কাজ করতে সক্ষম এখনো গবেষণাধীন।
- সুপার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাঃ অতিবুদ্ধিমান মানুষের চেয়েও বেশি বুদ্ধিমান। এটি ভবিষ্যতের সম্ভাবনা, তবে ভয়ও রয়েছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ৫টি সেরা ব্যবহার
শিক্ষাঃশিক্ষার্থীদের জন্য ব্যক্তিগত পাঠ্যক্রম তৈরি তাদের দুর্বলতা চিহ্নতকরে এবং শিক্ষকদের পুনরাবৃত্তি মূলক কাজ কমাতে এআই ব্যবহার হয়।
স্বাস্থ্যসেবাঃ রোগ নির্ণয়,ওষুধ তৈরি,ব্যক্তিগত চিকিৎসা পরিকল্পনা এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত হয়।
ব্যবসা বাণিজ্যঃগ্রাহক পরিষেবা উন্নত করতে ডাটা বিশ্লেষণ করে ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নিতে এবং বিপন্ন কৌশল তৈরিতে AI গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
পরিবহনঃযানবাহন (যেমন সেলফ-ড্রাইভিং গাড়ি)এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য AI ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিনোদন ও মিডিয়াঃ ব্যক্তিগত কন্টেন্ট,চিত্র তৈরি এবং বিনোদনশিল্পে নতুন অভিজ্ঞতা তৈরিতে AI ব্যবহার করা হচ্ছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের জীবন চলার অনেক সুবিধা বয়ে নিয়ে এসেছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে,প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি ও অর্থনীতিতে এর ব্যাপকভাবে প্রভাব পড়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধাগুলো।
নতুন আবিষ্কারঃকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা AIআমাদের জীবনযাত্রা সহজ করার জন্য
নতুন নতুন আবিষ্কার করতে সাহায্য করতে পারে। যেমন-বিভিন্ন রোগের ওষুধ তৈরি করার
উপকরণ আবিষ্কার করা।
- ব্যবসা ও অর্থনীতিতে উন্নয়নঃই-কমার সাইডগুলোতে ai ব্যবহার করে গ্রাহকদের জন্য ব্যক্তিগতকৃত পণ্যের সাজেশন দেওয়া হয়। এছাড়া অটোমেশিন ব্যবস্থার মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমে আসছে।এ আই নতুন শিল্প ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনীতিকে আরও ভালো ও উন্নত করতে পারে।
- ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সহযোগিতাঃমানুষ যেখানে কাজ করা ঝুঁকিপূর্ণ, সেখানে রোবট কাজ করছে। যেমন-মহাকাশ গবেষণা,খনি অনুসন্ধান,আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ বা সামরিক ক্ষেত্র। এর ফলে মানুষের জীবন চলায় ঝুঁকি কমছে।
- সমাজে উন্নতিঃকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সামাজিক সমস্যা যেমন দারিদ্র স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা অন্যান্য ক্ষেত্রে সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে। এইসব সম্পর্কে যেকোনো প্রশ্নের উত্তর কৃত্রিম বুদ্ধিমতা দিয়ে থাকে।
- স্বাস্থ্য সেবায়ঃAI এর মাধ্যমে এখন রোগ নির্ণয় অনেক সহজ হয়ে গেছে।যেমন- ক্যান্সার,ডায়াবেটিস কিংবা হার্টের রোগ সনাক্তে AI ভিত্তিক সফটওয়্যার ব্যবহার হচ্ছে।রোবটিক সার্জারি আরো নিখুঁতভাবে চিকিৎসা দিতে সাহায্য করছে।টেলিমেডিসিন রোগীদের বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অসুবিধা
মানব জীবন উন্নতি সাধনের যেমন বুদ্ধিমত্তার সুবিধা রয়েছে তেমনি এর পাশাপাশি অনেক অসুবিধা রয়েছে।Jonshon বলেন এ আই এমন একটি ক্ষেত্র যা বড় সুযোগ এবং বড় ঝুঁকিতে ভরা।কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অসুবিধা গুলো আমাদের জীবনে বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে।নিম্নে তার কিছু বিবরণ দেয়া হলো-
- সামাজিক ও মানসিক সমস্যাঃঅতিরিক্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা AI নির্ভরতা মানুষের চিন্তা ও সৃজনশীলতা কমিয়ে দিচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি,গেমিং অ্যাডিকশন,ডিপফেইক ভিডিও সবই মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যকর জন্য ক্ষতিকর।
- বেকারত্বের ঝুঁকি এবং স্থানচ্যুতিঃকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বড় চ্যালেঞ্জ হল বেকারত্ব।অনেক কারখানা ও অফিসের রোবট ও অটো মেশিন মানুষের জায়গা নিচ্ছে।ফলে ভবিষ্যতে অনেক মানুষ কাজ হারানো আশঙ্কায় রয়েছে।
- প্রযুক্তিগত নির্ভরতাঃকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এ আই এর উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা মানুষের নিজস্ব ক্ষমতাকে কমিয়ে দিতে পারে এবং প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীলতা বাড়িয়ে দিতে পারে।যেমন, GPS আসার পরে অনেক লোকের সঠিকভাবে দিকনির্দেশ করার জ্ঞান হ্রাস।
- সহানুভূতি ও সৃজনশীলতার অভাবঃকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনেক কিছু তৈরি করতে পারে যেমন কোড বা আর্ট কিন্তু এটি সৃজনশীল চিন্তা করতে পারেনা।AI শুধুমাত্র যা শেখানো হয়েছে তা জানে।এটি নতুন কিছু সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখে না।মানুষের মত অনুভূতি অনুভব পারে না।
- নৈতিক প্রশ্ন ও নিরাপত্তা ঝুঁকিঃকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা AI ব্যবহারের সঙ্গে নৈতিক ও গোপনীয়তা সমস্যা বাড়ছে। এআইভিত্তিক অস্ত্র বা নজরদারির ব্যবস্থা মানবাধিকার জন্য হুমকি হতে পারে আবার যদি কোন ভুল সিদ্ধান্ত নেয় তার দায়ভারকে নেবে এ প্রশ্নের উত্তর এখনো স্পষ্ট নয়।AI সিস্টেমকে হ্যাক করা যেতে পারে যা,যা নিরাপত্তা ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার
ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সম্ভাবনা
লেখক এর মন্তব্যঃকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url