ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায়

 ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায়: জীবনধারা বদলেই স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যৎ 

ডায়াবেটিস বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া সংক্রমক রোগগুলোর একটি। শুধু বয়স্ক নয় তরুণ তরুণীরাও ডায়াবেটিসের আক্রান্ত, এছড়া শিশুরাও হচ্ছে এবং এর কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। জীবনযাত্রায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন স্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস শারীরিক পরিশ্রম ওজন নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মিত ডক্টরের কাছে চেকআপ এর মাধ্যমে ডায়াবেটিস হতে পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে। 

ডায়াবেটিস-কমানোর-প্রাকৃতিক-উপায়

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে না থাকলে কিডনি,হার্ট ,শারিরীক ,ও মানুষিক দুর্বলতা প্রকাশ পায়। তাই আমরা দ্রুত প্রাকৃতি উপায়ে সমাধানে সচেষ্ট হই।এছাড়া দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ আনুযায়ী  জীবন যাপন করি।

ডায়াবেটিসের ধরনঃ

ডায়াবেটিস সাধারণত দুই ধরনের।  

টাইপ ১ঃএ ধরনের ডায়াবেটিসে ইনসুলিন একেবারে কম থাকে অথবা থাকেনা।

টাইপ ২ঃএ ধরনের ডায়াবেটিসে ইনসুলিন আছে কিন্তু ঠিকমতো কাজ করেনা। 

সাধারণত  টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রাকৃতিকভাবে যত্ন নিলে তা নিরাময় করার সম্ভব হয় 

পোস্ট সূচীপত্রঃডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায় ।

ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায় 

সুস্বাস্থ্যকর খাদ্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল নিয়মিত গ্রহণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব 
যেমন ফাইবার সমৃদ্ধ যে শাকসবজি করলা পুঁইশাক লাউ পালং শাক মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি রক্তে শর্করা ধীরে ধীরে বাড়ায়। 

লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাবার সমূহ 

ব্রাউন রাইস, স্পোর্টস ফোর্স,  ওটস ,হোল হুইট রুটি, মুগের ডাল, ছোলা, মসুর ডাল ইত্যাদি রক্তে শর্করা হঠাৎ বৃদ্ধি রোধ করে।

চিনি ও প্রক্রিয়া জাত খাবার এড়ানো 

মিষ্টি জাতীয় খাবার ,সফট ড্রিঙ্কস ,প্যাকেটজাত বিস্কুট, কেক ,পাউরুটি,বার্গার ,ইত্যাদি খাবার বর্জন করতে হবে। 

স্বাস্থ্যকর তেল 

সরিষার তেল ,অলিভ অয়েল, ফ্লাক্স সিড অয়েল,নারিকলের তেল ইত্যাদি পরিমাণ মতো খেলে হৃদ যন্ত্র সুরক্ষিত থাকে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত থাকে বিশেষ করে সয়াবিন তেল বর্জন করতে হবে।

নিয়মিত শরীর চর্চা 

নিয়মিত শরীরচর্চাঃ ইনসুলিন এর কার্যকারিতা এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। 
প্রতিদিন হাটাঃ প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট দ্রুত হাটা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এক বিশেষ উপকার। 
যোগব্যায়াম ও প্রাণায়ামঃযোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে যোগের আসন যেমন ভুজঙ্গসন ধনুরাসন ওমা কার প্রণয়ন ইনসুলিনের সংবিদোনশীলতা বাড়াই। সপ্তাহ ৩ থেকে ৪ দিন জীমে গিয়ে ব্যায়াম করলে শারীরিক শক্তি বাড়ে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকিরী।

হালকা ব্যায়াম ঃ

সাঁতার কাটা সাইকেলিং করা হালকা দৌড় বা স্ট্রেচিং করা যেতে পারে । 

মানসিক চাপ নিমন্ত্রণ 

মানসিক চাপ হরমনের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং রক্তে  শর্করা  বাড়ায়। 
পর্যাপ্ত ঘুমঃ৭-৮ ঘন্টা পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক চাপ কমাই এবং মেটাবলিজম গ্লুকোজ উন্নত করে। কম ঘুমানো ও ঘুমের মান খারাপ হলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়ে। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমোন এবং ওঠার অভ্যাস করতে হবে। 

মেডিটেশন ঃ১০-১৫মিনিট প্রতিদিন মেডিটেশন করলে মন প্রশস্ত হয়। 

শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়ামঃঅনুলোম বিলম গভীর নেওয়া ইত্যাদি প্র্যাকটিস করলে স্ট্রেস কমে। 

ওজন নিয়ন্ত্রণ 

ডায়াবেটিস-কমানোর-প্রাকৃতিক-উপায়


অতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিসের বড় কারন।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করাঃকম ক্যালোরিযুক্তখাবার গ্রহন, নিয়মিত ব্যায়াম,পর্যাপ্ত ঘুম।
আতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিসের পাশাপাশি চলাফেরাও কষ্ট কর।

পর্যাপ্ত পানি পান 

পর্যাপ্ত পানি পানে রক্তে শর্করা কম থাকে।
সকালে খালি পেটে পানি পানে বিশেষ উপকারিতা আছে।
প্রতিদিন ২.৫-৩ লিটার পানি পান করা উচিত। 
লেবু পানি বা হালকা ডাবের পানি হালকা গরম পানি খাওয়া  যেতে পারে, তাহলে রক্তে শর্করা কম হবে। 

ভেষজ ও প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণ 


মেথি দানাঃমেথি দানা ভিজিয়ে রেখে খেলে রক্তের শর্করা কমে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি  পায়।                                                                                                                                  
দারুচিনিঃহালকা কুসুম গরম পানিতে দারুচিনি মিশিয়ে খেলে রক্তের শর্করা মাত্রা কমে।

তুলসী পাতাঃতুলসী পাতার এন্টি অক্সিডেন্ট রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায়। এলোভেরা  রস ইনসুলিনের সংবিদোনশীলতা বাড়াতে পারে। 

অ্যালকোহল ও ধূমপান বর্জন 

ধূমপান রক্ত নালী ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং ডায়াবেটিসের ক্ষতি করে 
অ্যালকোহল রক্তে শর্করা বাড়ায় এবং কমায় তাই এগুলো পরিত্যাগ করা।

নিয়মিত মদ্যপান ডায়াবেটিস ছাড়া ক্যান্সারে আক্রান্ত হতেপারে।

শর্করা পরীক্ষা করা 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের অগ্রগতি বোঝার জন্য নিয়মিত রক্তের শর্করা পরীক্ষা করতে হবে। 

HbA1c পরীক্ষা  ৩-৬মাস পর পর করা উচিত। 

সুস্থ জীবনযাপন 

ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায়ে জীবন যাপন করার চেষ্টা করলে জীবন অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।শরীল সুস্থ না থাকলে মন ও অসুস্থ হয়ে পড়ে যা আমাদের জীবনের চলার পথে অনেক কষ্টকর।

ডায়াবেটিস-কমানোর-প্রাকৃতিক-উপায়


ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ শুধু খাদ্য ও ওষুধের মাধ্যমে হয় না বরং একটি উন্নত জীবনধারা আবশ্যিক। সুষম খাদ্য নিয়মিত ব্যায়াম মানসিক শান্তি পর্যাপ্ত বিশ্রাম এর মাধ্যমে  সম্ভব। 

চিকিৎসকের পরামর্শ 

প্রাকৃতিক উপায়গুলো খুবই কার্যকর তারপরও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবন যাপন করা অত্যাবশকীয়। 

শেষ কথাঃডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায় 

ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক  উপায় অনেক আছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ  যোগ্য রোগ, ঔষধের পাশাপাশি সুস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস নিয়মিত ব্যায়াম ও মানসিক চাপ কমানো ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ভেষজ উপাদানের সঠিক ব্যবহার করে ডায়াবেটিস থেকে অনেকটাই প্রাকৃতিকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সুস্থ জীবনের জন্য আজ থেকেই সচেতনতার সাথে জীবনযাপন শুরু করা উচিত। সুস্থ জীবন সুস্থ মন গড়ে তুলি আজীবন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url